রাঙ্গামাটিতে বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০১৬ উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান
জেলা প্রশাসন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও খাদ্য অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা এর আয়োজনে ১৬ অক্টোবর, ২০১৬ তারিখে বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০১৬ উদযাপন উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আবু শাহেদ চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান, জেলা প্রশাসক, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রমনী কান্তি চাকমা এবং খাদ্য অধিদপ্তরের জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম কায়ছার আলী।
অনুষ্ঠানের শুরুতে এক বর্ণাঢ্য র্যালি জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গন থেকে শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক তপন কুমার পাল। তিনি বলেন খাদ্য মানুষের মৌলিক অধিকার। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ করে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে, খাদ্য উৎপাদন, খাদ্য নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান ও রপ্তানী বাণিজ্যে কৃষি ও কৃষকের ভূমিকা অপরিসীম। দেশে আবাদী জমির পরিমান প্রতি বছর ১% হারে হ্রাস পাচ্ছে পক্ষান্তরে ১.৪১% হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে জনসংখ্যা। এই ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা মেটাতে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি মৎস্য ও প্রানিসম্পদের উৎপাদন ও বৃদ্ধি করতে হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম কায়ছার আলী বলেন বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০১৬ এর প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে “Climate is changing, Food and agriculture must too.” অর্থাৎ “জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাদ্য এবং কৃষিও বদলাবে”। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে সঠিক পরিকল্পনা প্রনয়ন ও বাস্তবায়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। উপ- পরিচালক কৃষিবিদ রমনী কান্তি চাকমা তার বক্তব্যে বলেন জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষিতে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বর্তমান সরকারের গৃহীত বিভিন্ন বাস্তবমুখী পদক্ষেপ দক্ষতার সাথে বাস্তবায়ন করে চলেছে। যার ফলশ্রুতিতে বিগত কয়েক বছরে খাদ্য উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমানে বেড়েছে। দেশে গত ১৪-১৫ অর্থ বছরে মোট ৩.৪৭ কোটি মেট্টিক টন চাল এবং ৯৩.২৮ লাখ মেট্টিক টন আলু ও ১৪২.৩৭ লাখ মেট্টিক টন সবজি উৎপাদন হয়েছে। ফসল উৎপাদনে বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বে ৩য়। এ ধারা অব্যাহত রাখার ব্যপারে তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান বলেন ষাট এর দশকে দেশে লোকসংখ্যা প্রায় ৭ কোটি থাকা স্বত্বেও খাদ্য ঘাটতি ছিল। বর্তমানে লোকসংখ্যা দ্বিগুনেরও বেশী হওয়া স্বত্বেও বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ক্রমবর্ধমানভাবে কৃষি জমি কমে যাওয়া স্বত্বেও খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানী হচ্ছে। এজন্য কৃষি, প্রানিসম্পদ ও মৎস্য বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ অর্জণকে ধরে রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আরো সচেতন ও কর্মনিষ্ট হয়ে কাজ করার উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারী, বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ, কৃষক-কৃষানী, জনপ্রতিনিধি, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি ও সম্প্রসারণ কর্মীগনউপস্থিত ছিলেন।